খামারের অবকাঠামো (২.১০)

এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২ প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | - | NCTB BOOK
249
249

গলদা চাষের সফলতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খামারের অবকাঠামো সঠিক পদ্ধতিতে নির্মাণের উপর নির্ভরশীল। সঠিকভাবে খামারের অবকাঠামো নির্মাণ করা না হলে একটু ভুলের কারণে মোট ফসলই নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তাই গলদা খামারের অবকাঠামো সঠিক পদ্ধতিতে করা বাঞ্জনীয়। চাষ সুবিধার জন্য খামারে মূল অবকাঠামোর ব্যবহার ও নির্মাণ পদ্ধতি নিম্নে বর্ণিত হলো-

Content added By

আয়তন (২.১০.১)

194
194

সাধারণত চাষ পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে গলদা চাষের পুকুরের আয়তন নির্ধারণ করা হয়। সনাতন চাষ পদ্ধতিতে পুকুরের আকারের বা আয়তনের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। মিশ্র চাষ ও আধানিবিড় চাষ পদ্ধতিতে ০.২৫-২.০ হেক্টরের পুকুরে গলদা চিংড়ি চাষ করা হয় এবং নিবিড় চাষ পদ্ধতিতে ০.২৫-১.০ হেক্টর আয়তনের পুকুরে গলদা চিংড়ি চাষ করা হয়।

Content added By

পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন গেইট (২.১০.২)

161
161

খামারের প্রতিটি পুকুরে পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন গেইট থাকা প্রয়োজন। পুকুরের তলদেশ ক্রমান্বয়ে নিষ্কাশন গেইটের দিকে ঢালু থাকা উচিত। এর ফলে প্রয়োজন অনুসারে পুকুরের পানি সম্পূর্ণরূপে নিষ্কাশন করা সহজ হয়।

Content added By

খাল খনন (২.১০.৩)

314
314

পুকুরের পাড় থেকে ৩ মিটার দুরে পুকুরের ভিতরের দিকে ২ মিটার প্রশস্থ ও ০.৫ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট একটি খাল পাড়ের চারপাশে এবং পুকুরের মাঝ বরাবর দু'পাড়ের খালের সংযোগের জন্য খাল নির্মাণ করা হয়। এই খাল চিংড়ির আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পুকুর থেকে চূড়ান্তভাবে চিংড়ি ধরার সময় এসব খাল ব্যবহার করা যায়।

Content added By

পানি সরবরাহ খাল (২.১০.৩.১)

175
175

পানি সরবরাহের জন্য যে সমস্ত খামার বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল সেসব খামারে পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন খাল নির্মাণের প্রয়াজেন নেই। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির অভাব হলে চিংড়ি চাষে বিঘ্ন ঘটে। এজন্য প্রয়োজনে যে কোনো সময় খামারে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা দরকার। আর এই আপদকালীন সময়ে পানি সরবরাহের জন্যই খামারে পানি সরবরাহ খাল নির্মাণ করা হয়। আবার কোনো কোনো সময় পানি প্রাপ্তির উৎস থেকে সরাসরি পানি পুকুরে সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে পানি সরবরাহ খালের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়। পুকুরে সরবরাহের সময় যাতে রাক্ষুসে মাছ ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণী পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি পুকুরে সুইস গেইট থাকা দরকার। আবার যেসব খামারে শোধনকৃত পানি সরবরাহ করা হয় সেসব খামারে পুকুরের বাঁধের উপর নির্মিত নালার মাধ্যমে অভিকর্ষ পদ্ধতিতে পুকুরে পানি সরবরাহ করা হয়।

Content added By

পানি নিষ্কাশন খাল (২.১০.৩.২)

280
280

পুকুর শুকানো এবং পানির গুণাগুণ সঠিক মাত্রায় রাখার জন্য পুকুরের পানি নিষ্কাশন করা হয়। নিষ্কাশন খালের মাধ্যমে পুকুরের পানি নিষ্কাশন করা হয়। এই নিষ্কাশন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পুকুরের তলদেশ পানি প্রবেশ করানোর গেইটের দিক থেকে নিষ্কাশন গেইটের দিকে ঢালু হতে হবে। সাধারণত পুকুরের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন খালের মাধ্যমে অভিকর্ষ পদ্ধতিতে পুকুর থেকে নিষ্কাশন করা হয়। বাংলাদেশে বর্ষাকালে খামারের বাইরের পানির উচ্চতা বেশি থাকে বিধায় অনেক সময় খালের মাধ্যমে পানি অভিকর্ষ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায় না। বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ গলদা খামারেই পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে খামারের উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং চিংড়ির নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Content added By

পানির গভীরতা (২.১০.৪)

231
231

পালন পুকুরে পানির গভীরতা ১-২ মিটার রাখা দরকার। এজন্য পুকুর পাড় থেকে পুকুরের তলার পানির গভীরতা ১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।

Content added By

বেস্টনি বাঁধ (২.১০.৫)

188
188

বাঁধের উচ্চতা পুকুরের পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে কমপক্ষে ৩.৬০ মিটার উঁচু থাকা দরকার। বেষ্টনী বাঁধ, পুকুর বা খালের বাঁধ যাই নির্মাণ করা হোক তা অবশ্যই ভালাভোবে আঁটসাঁট বা কমপ্যাক্ট করে নির্মাণ করতে হবে। সঠিকভাবে কমপ্যাক্ট করা না হলে বাঁধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং পুকুরের পানি ধরে রাখতে অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে।

Content added By

বাঁধের ঢাল (২.১০.৬)

290
290

বাঁধের উচ্চতা, মাটির ধরন এবং পানির ঢেউ ও স্রোতের ওপর নির্ভর করে বাঁধের ঢাল নির্ধারণ করা হয়। বেলে দো-আঁশ মাটির পুকুরের বাঁধের বাইরে ও ভিতরে উভয় দিকে ৩:১ এবং এঁটেল মাটিতে ২:১ হারে ঢালু হওয়া প্রয়োজন। এঁটেল মাটির ক্ষেত্রে বাঁধের ঢাল পুকুরের ভিতরের দিকে ১:১ রাখা যায়। একটি বাঁধের উচ্চতা নিম্নবর্ণিত সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়ঃ

এখানে-

ক = সংগৃহীত তথ্য মোতাবেক সর্বোচ্চ জোয়ারের উচ্চতা

খ = চাষের জমির উচ্চতা থেকে সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় উচ্চতার পার্থক্য এবং

প = বাঁধ কতটুকু অতিরিক্ত উঁচু করা হবে তার পরিমাণ।

যে কোনো খামারে কোনো বাঁধ নতুনভাবে তৈরি করতে কি পরিমাণ মাটির প্রয়োজন হবে তা সহজেই নিচের সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।
মোট মাটির পরিমাণ =১/২ (উপরিতলের প্রশস্ততা + ভূমির প্রশস্ততা) × উচ্চতা × মোট দৈর্ঘ্য।

যদি একটি পুকুরের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার, প্রস্থ ৪০ মিটার, বাঁধের ভূমির প্রশস্ততা ৩ মিটার এবং বাঁধের উপরিভাগের প্রশস্ততা ১ মিটার এবং উচ্চতা ২ মিটার হয় তাহলে তলের বাঁধের মোট দৈর্ঘ্য হবে ২৮০ মিটার। অতএব মোট মাটির পরিমাণ = ১/২(১+৩) × ২ × ২৮০ ঘনমিটার = ১১২০ ঘনমিটার। 

Content added By
Promotion